Saturday, July 28, 2012

বেশ চলছে

এক

আজকাল রাতে আর ভালো ঘুম হয় না,
বোধহয় ঘুমেরাও ছেড়ে চলে গেছে।
অনেক বছর আগে, যখন ছোট্টটি ছিলাম,
বেশ শান্তিতেই ঘুমোতাম, আর
স্বপ্নে দেখতাম বড় হয়ে গেছি।
ওটা যে আসলে দুঃস্বপ্ন ছিলো,
তা তো কেউই বলেনি!
তখন না বুঝলেও, আজকে হাড়েহাড়ে জানি,
বড় হওয়াটা কোনও কাজের নয়।

ইন্ডিয়া অর্থাৎ ভারত

ভারতবর্ষ! এক অদ্ভুত দেশ। দেশই শুধু নয়, একে উপমহাদেশ বলেও অভিহিত করা হয়। এই দেশে অনেক কিছুই আছে। আর তার উলটো পিঠে না থাকার ঘরও মোটামুটিভাবে কানায় কানায় ভরা। ভারতের সংবিধানে সবপ্রথমেই দেশের নাম সম্বন্ধে বলা হয়েছে - "India, that is Bharat" - অর্থাৎ, দেশের নামটা হলো ইন্ডিয়া, মানে ভারত। সমস্যাটা হলো যে এই দেশে আজকাল দু-ধরণের নাগরিক সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম দল, ইণ্ডিয়ান আর দ্বিতীয় দল, ভারতীয়। এই দু-ধরণের লোককে চিনতেও কারুরই অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। ইণ্ডিয়ানদের চেহারা-চরিত্তির দেখলেই বোঝা যায় যে এনারা বেশ রসেবসেই আছেন। এদের বেশ নাদুসনুদুস, গোলগাল, তেল-চিকচিকে চেহারা, পকেটের মানিব্যাগে রকমারি কার্ড, গোটাদুয়েক মোবাইল ফোন ইত্যাদি থাকে। এরা শপিং মলে শপিং করতে যান। বাজারে একটু "মার্কেটিং" করতে যান আর, মোটামুটি সবসময়ই এরা যানের ওপরেই থাকেন। খুব কদাচিৎ, ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী, এর হাঁটতে বেরোন। এরা ছাড়াও এই দেশেই আরেক ধরণের লোকও দেখতে পাওয়া যায়। এরা হলেন ভারতীয়। এদের চেহারা, সাজপোষাক ইণ্ডিয়ানদের মতন অতো চকচকে নয়, বরং বেশ মলিনই বলা যায়। কথাবার্তায়ও এরা পিছিয়ে, মানে বেশীরভাগ সময়ই নিজেদের মাতৃভাষায় কথা বলে থাকেন। এরাও মাঝেমধ্যে শপিংমলে যান। তবে "শপিং" করতে নয়, বেড়াতে অথবা কোন কাজে, যেমন ইলেকট্রিকাল ওয়ারং বা সাফাই এর কাজ।

Tuesday, July 10, 2012

সত্যমেব জয়তে, আমির খান এবং ভারতীয় সমাজ

টেলিভিশনের জন্মের পর থেকেই এই মাধ্যমকে অনেকেই বোকা বাক্স হিসেবে মনে করেন। আর আজকের দিনে, যখন ভারতে ছ'শোর বেশী চ্যানেল সম্প্রচারিত হচ্ছে, তখন এই বিশেষণকে খুব একটা ভুলও বলা যায় না, বিশেষতঃ বেশীর ভাগ চ্যানেলেই শ্বাশুড়ি-বৌমা, পারিবারিক কলহ ইত্যাদি নিয়ে যখন একের পর এক সিরিয়াল বা "মেগা" চলতেই থাকে। সংবাদ পরিবেশনকারী চ্যানেলগুলোও টিআরপি (জনপ্রিয়তার মাপকাঠি) বাড়ানোর চক্করে একের পর এক "ব্রেকিং নিউজ" বানাতেই থাকে। এর ফলটা এই হয় যে, যেকোন ঘটনাকেই চ্যানেলের মাধ্যমে sensationalize করে জনগণকে খাইয়ে দেওয়া হয়, আর দর্শকরাও নিউজস্টোরিকে বিনোদনের এক অংশ বলেই মনে করেন।

এরকম একটা অবস্থায় হঠাৎ শুনতে পাওয়া গেলো যে আমির খানও নাকি ছোট পর্দায় আসছেন। ব্যাস, সাথেসাথেই হইচই আরম্ভ হয়ে গেলো। মিডিয়ার লোকেরা নিত্যনতুন খবর দিতে আরম্ভ করলেন এই সিরিয়াল নিয়ে। কিছুদিন পরে জানা গেলো যে সিরিয়ালটার নাম "সত্যমেব জয়তে", অর্থাৎ সত্যের জয় সর্বত্র। বলা হলো যে এটা একটা "রিয়ালিটি শো", অর্থাৎ বাস্তবিক ঘটনার ওপর ভিত্তি করে প্রস্তুত। আর এই অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ভারতের সমাজ ব্যবস্থায় এবং ভারতীয়দের রোজকার জীবনে চলতে থাকা সামাজিক ব্যাধিগুলোকে নির্মূল করা।

সত্যমেব জয়তের সাথে যেহেতু আমির খান যুক্ত, তাই অনেকেরই আশা ছিলো যে এটা কোন গিমিক বা শস্তা প্রচারের লোভে করা অনুষ্ঠান হবে না। সত্যমেব জয়তে, সত্যি সত্যিই ভারতীয় সমাজে একটা পজিটিভ বদল আনবে বলে মনে করা হচ্ছিলো। প্রথম দিকের এপিসোডগুলোর জনপ্রিয়তা দেখে ও অনুষ্ঠানের ফলে অনেক রাজ্য সরকারও নড়েচড়ে বসায় এই আশা আরো উজ্জ্বল হয়। কিন্তু পরবর্তীতে অনুষ্ঠান তার জনপ্রিয়তা আর ধরে রাখতে পারে নি। তবুও, এই অনুষ্ঠানের ফলে অনেকগুলো সামাজিক ব্যাধি এবং বে-আইনি কার্য্যকলাপের কথা সমাজ ও সাধারণ লোকের চোখের সামনে এসে পড়ে। আমির খান, তার জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সমাজের একদম সাধারণ শ্রেণীর লোকেদের মধ্যেও যেভাবে এই সামাজিক ক্ষতগুলোকে তুলে ধরেছেন, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়।

Share