কদিন আগে থেকেই আমাদের ছোটকালে শোনা একটা কথা মনে পড়ছিলো। অনেকেই বলতেন যে আগের দিনের - ম্যাট্রিক পাশের ভ্যালু নাকি আজকালের গ্র্যাজুয়েটের থেকে বেশী। তা আগের দিন বলতে কোন সময়টাকে বোঝায়। একটু বেশী বয়সিদের কাছে আগের দিনের মানে ধরে নিন ঐ বৃটিশ আমল-টামল কিছু একটা হবে। তার থেকে একটু কমবয়সী এবং যারা সাহেবদের কাছে পড়ার সুযোগ পান নি, তাদের কাছে আগের দিন মানে হলো ঐ ১৯৪৭ থেকে শুরু করে পনেরো-কুড়ি বছর আগে পর্যন্ত সময়কালটা। তবে, একটা জিনিসে এরা সবাই একমত হতেন যে পড়াশুনোর সিস্টেমটা জাহান্নামে গেছে। আজকাল নাকি কথায় কথায় সবাই লেটার মার্কস (মানে আশি শতাংশ) পেয়ে যায়, অথচ জ্ঞানের বেলায় নাকি ঢুঢু।
তা কথাটা মনে পড়ার কারনটা হলো যে কোনও এক জায়গায় আমিও মোটামুটি ওরকমই কিছু একটা বলে বসেছি। তারপর থেকেই ভাবছিলাম, এতো তাড়াতাড়ি আমাকেও এই দোষে পেয়ে গেলো নাকি রে বাবা। অবশেষে স্টেটমেন্টটা ভালো ভাবে দেখে চিন্তামুক্ত হলাম। নাঃ, আমি আমাদের সময়ে সবই ভালো ছিলোর রোগে আক্রান্ত হই নি। অন্ততঃ এখনো। আমি গোটা শিক্ষাব্যবস্থাটাকেই অকর্মার ঢেঁকি বলে মনে করছি, আর এর মধ্যে কোনও স্থান-কালের ভেদাভেদ নেই। হঠাৎ করে এতো জেনারেলাইজড কথা কেনো বললাম? সেটা বলার জন্যেই এই লেখা।
২০০৬-০৭ সাল নাগাদ বিখ্যাত ম্যাকিনসি কোম্পানি বিভিন্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ওপর একটা রিপোর্ট বের করেছিল। ঐ রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রাজুয়েটদের মধ্যে মাত্র পঁচিশ শতাংশ, জেনারেল গ্রাজুয়েটদের মাত্র দশ শতাংশ আর ফিনান্স গ্রাজুয়েটদের পনেরো শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী এমপ্লয়েবল, অর্থাৎ কিনা যাদের সোজাসুজি কাজ করতে নামিয়ে দেওয়া যায়। বাকিদের মধ্যে আরো ষাট থেকে সত্তর শতাংশকে উপযুক্ত ট্রেনিং দিয়ে কাজের বাজারের উপযোগী করে তোলা যায়। আর সব শেষের পাঁচ থেকে দশ শতাংশকে দিয়ে কোনও কাজই হবে না বলে ওই রিপোর্টে লেখা হয়।